“২৫ তম বিশ্ব ডিম দিবস” পালন করে বাংলাদেশ এনিমেল এগ্রিকালচার সোসাইটী (BAAS)

আজ ৮ অক্টোবর, ২০২১, শুক্রবার, “২৫ তম বিশ্ব ডিম দিবস”। প্রতি বছর অক্টোবর মাসের ২য় শুক্রবারে সারা বিশ্বে পালিত হয় ‘বিশ্ব ডিম দিবস। ১৯৯৬ সাল থেকে যুক্তরাজ্যের ইন্টারন্যাশনাল এগ কমিশন (IEC) বিশ্বপ্যাপী এই দিবসটি পালন করে এবং তাঁদের তত্ত্বাবধানে প্রতিবছর বিশ্বব্যাপী বৃহৎ পরিসরে এই দিবসটি পালিত হয়। ভোক্তা সচেতনতা বাড়াতে এবং মানসম্মত উৎপাদনে খামারীকে সচেতন করতে এই দিবসের গুরুত্ব বাড়ছে। ২০২১ সালের ৮ অক্টোবর, শুক্রবার বিশ্বব্যাপী পালিত হবে ২৫ তম বর্ষ।
বাংলাদেশ এনিমেল এগ্রিকালচার সোসাইটী (BAAS) ২০১৩ সালে বাংলাদেশে প্রথম এই দিবসটি পালন করে ইন্টারন্যাশনাল এগ কমিশনের বাংলাদেশ প্রতিনিধি হিসেবে। এই সংগঠনটি প্রতিবছর নিয়মিত এই দিবসটি পালন করে আসছে এবং পোল্ট্রি শিল্প সংশ্লিষ্ট অনেকেই এই দিবসের গুরুত্ব উপলব্ধি করে, এদেশে “বিশ্ব ডিম দিবস” পালন করা শুরু করেছে।
দিবসটি পালনের উদ্দেশ্যে বাংলাদেশ এনিমেল এগ্রিকালচার সোসাইটী (BAAS), জাতিসংঘের খাদ্য ও কৃষি সংস্থা (FAO) এবং ইন্টারন্যাশনাল এগ কমিশন (IEC) যৌথভাবে কে আই বি ক্যাফেটেরিয়া, কে আই বি কমপ্লেক্স চত্ত্বর, খামারবাড়ি সড়ক, ঢাকায় “ডিম, একটি ভাল খাদ্য” এই শিরোনামে একটি আলোচনা অনুষ্ঠানের আয়োজন করে।
বাংলাদেশ এনিমেল এগ্রিকালচার সোসাইটীর সভাপতি কৃষিবিদ মোঃ মোরশেদ আলমের সভাপতিত্বে উক্ত অনুষ্ঠানে উপস্থিত ছিলেন জাতিসংঘের খাদ্য ও কৃষি সংস্থা (FAO) এর প্রানিসম্পদ উন্নয়ন বিশেষজ্ঞ জুলিয়াস মুচেমী, জিটিভি টিভি এর প্রধান সম্পাদক, সৈয়দ ইশতিয়াক রেজা, দৈনিক জনকন্ঠের উপ-সম্পাদক ওবায়দুল কবীর, বিশিষ্ট ডায়েটিশিয়ান, স্কয়ার হাসপাতালের প্রাক্তন ক্লিনিক্যাল ডায়েটিশিয়ান ও ল্যাবএইড হাসপাতালের প্রাক্তন পুষ্টিবিদ নুসরাত জাহান, বিশিষ্ট রন্ধন শিল্পী নাহিদ ওসমান, কৃষিবিদ ইন্সটিটিউটের মহাসচিব কৃষিবিদ খায়রুল আলম প্রিন্স, বাংলাদেশ এনিমেল এগ্রিকালচার সোসাইটী এর সহ-সভাপতি ড. কামরুজ্জামান, সিনিয়র সভাপতি ডাঃ মোঃ রেজাউল করিম মিয়া, কৃষিবিদ ইন্সটিটিউট বাংলাদেশের ঢাকা মেট্রোর সভাপতি কৃষিবিদ লিয়াকত আলী জুয়েল, মহাসচিব ড. তাসদিকুর রহমান সনেট সহ অন্যান্য সদস্যবৃন্দ।
বক্তারা একটি পূর্নাংগ এবং আদর্শ খাদ্য হিসেবে ডিমের নানা তথ্য-উপাত্ত উপস্থাপন করে এর গুরুত্ব বর্ণনা করেন। তাঁরা বলেন যে, বাংলাদেশের আর্থ-সামাজিক পরিপ্রেক্ষিতে ডিম একটি অতি উৎকৃষ্ট খাদ্য যাকে বর্তমানে ‘সুপার ফুড’ বলা হয়। রন্ধনশিল্পী নাহিদ ওসমান বলেন যে, বর্তমান বিশ্বে ডিম ছাড়া রান্না কল্পনাই করা যায় না। বিশ্বে রান্নার জন্য উপকরনের ভিন্নতা থাকলেও ডিম সব দেশের এবং অঞ্চলের রান্নায় আবশ্যকীয় উপকরন। বিশিষ্ট ডায়েটিশিয়ান নুসরাত জাহান বলেন যে, ডিমের পুষ্টিগুন অপরিসীম। ডিমে আছে মানবদেহের জন্য অতি প্রয়োজনীয় ভিটামিন যেমন ভিটামিন বি, ভিটামিন ডি, আছে জিংক, সেলেনিয়ামের মত গুরুত্বপূর্ন খনিজ। ডিমে আছে সহজপাচ্য এবং উন্নত আমিষ।
তিনি বলেন যে, একজন সুস্থ মানুষ প্রতিদিন কমপক্ষে একটি ডিম খেতে পারে। জিটিভি টিভি এর প্রধান সম্পাদক এবং বিশিষ্ট গনমাধ্যমম ব্যাক্তিত্ব সৈয়দ ইশতিয়াক রেজা বলেন আয়োজক সংগঠনটি ২০১৩ সালে বাংলাদেশে প্রথম ‘বিশ্ব ডিম দিবস’ পালন করে এবং তিনি শুরু থেকেই এই কার্য্যক্রমের সাথে নিজেকে জড়িত রেখেছেন, কারন তিনি মনে করেন বাংলাদেশের মত দেশে একক খাদ্য হিসেবে ডিম একটি গুরুত্বপূর্ন খাবার, যা সহজলভ্য এবং সহজপ্রাপ্য। কৃষিবিদ ইন্সটিটিউট বাংলাদেশের মহাসচিব কৃষিবিদ খায়রুল আলম প্রিন্স বলেন যে, কৃষির যা কিছু মংগলময় কৃষিবিদ ইন্সটিটিউট বাংলাদেশ তাদের অনুপ্রেরনা দিয়ে থাকে। কোভিডকালে কৃষির সকল ক্ষেত্রের অবদান আজ সকলের নজর কেড়েছে।
এই মহামারীকালে রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বৃদ্ধিতে ডিম একটি অতি উৎকৃষ্ট খাদ্য। সন্মানিত অতিথি এবং জাতিসংঘের কৃষি ও খাদ্য সংস্থার প্রানিসম্পদ উন্নয়ন বিশেষজ্ঞ জুলিয়াস মুচেমী বলেন যে তাঁর সংস্থা ডিমের আন্তর্জাতিক সংস্থা ইন্টারন্যাশনাল এগ কমিশনের সাথে বিশ্বব্যাপী উন্নত খাদ্য হিসেবে ডিমের মানোন্নয়নের জন্য একসাথে কাজ করছে। বাংলাদেশেও তাঁদের সংস্থা এই উদ্দেশ্যে প্রতি বছর বিশ্ব ডিম দিবস পালনে বাংলাদেশ এনিমেল এগ্রিকালচার সোসাইটীকে সহযোগীতা করছে। ভবিষ্যতে তাঁরা ডিমের মানোন্নয়ন এবং ভোক্তা গ্রহনযোগ্যতা বাড়াতে সক্রিয়ভাবে কাজ করে যাবেন। সভাপতির বক্তব্যে কৃষিবিদ মোঃ মোরশেদ আলম বলেন যে, ডিম একটি উৎকৃষ্ট একক খাদ্য। দীর্ঘ প্রচেষ্টায় এবং গনমাধ্যমের সক্রিয় সহযোগীতায় আমরা ভোক্তার মাঝে এই তথ্য ছড়িয়ে দিতে সক্ষম হয়েছি। অন্যদিকে খামারী তথা উৎপাদককে মানসম্মত ডিম উৎপাদনে উদ্বুদ্ধ করতে সক্ষম হয়েছি, যার ফলে ৮ বছরে ডিমের উৎপাদন এবং ডিম গ্রহন বেড়েছে প্রায় তিন গুন। বর্তমানে বছরে প্রায় ২০০০ কোটী ডিম উৎপাদিত হয়।
উক্ত অনুষ্ঠানে ভোক্তার মাঝে প্রতিপাদ্য বিষয় “আজ ডিম খান এবং প্রতিদিন ডিম খান” সম্বলিত টি-শার্ট বিতরন করা হয় এবং অনুষ্ঠান শেষে ভোক্তা সচেতনতার উদ্দেশ্যে বিনামূল্যে কয়েক হাজার সিদ্ধ ডিম বিতরন করা হয়।
সুষ্ঠু অনুষ্ঠান সম্পন্ন হওয়ায় উপস্থিত সকলকে ধন্যবাদ জানিয়ে কর্তৃপক্ষ অনুষ্ঠানের সমাপ্তি ঘোষনা করে।

Related posts

Leave a Comment

CAPTCHA ImageChange Image